পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য চাই বৃক্ষরোপণ

আমাদের চারপাশে আলো-বাতাস, মাটি-পানি, নদীনালা, পাহাড়-পর্বত, পশু-পাখি নিয়ে যে প্রাকৃতিক অবস্থান গড়ে ওঠেছে তা-ই পরিবেশ। পরিবেশের সঙ্গে মিলেমিশেই মানুষ এবং জীবকূলের বিকাশ ঘটে। পরিবেশগত ভারসাম্যের ওপর জীবকূলের অস্তিত্ব নির্ভরশীল। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য সবার আগে প্রয়োজন প্রকৃতির স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে অক্ষুণ্ণ রাখা। বৃক্ষ প্রকৃতির অমূল্য সম্পদ। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের অবদান অসামান্য। পরিবেশের বিরুদ্ধে যখন থেকে মানুষের আগ্রাসন শুরু হয়েছে তখন থেকেই সূত্রপাত ঘটেছে পরিবেশ বিপর্যয়ের। জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপের ফলে প্রাকৃতিক সম্পদ- ভূমি, পানি ও বায়ুর উপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উদ্ভিদজগৎ ও প্রাণিজগৎ। উজাড় হচ্ছে বন, তৈরি হচ্ছে অপরিকল্পিত নগর। কলকারখানার বর্জ্য, যানবাহনের কালোধোয়া, রাসায়নিক তেজস্ক্রিয়তা, চরমভাবে পরিবেশকে ধ্বংস করছে। রাসায়নিক সার, কীটনাশকের অপরিকল্পিত এবং মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করছে।

বৃক্ষ মানুষের পরম বন্ধু, পরিবেশের অমূল্য সম্পদ। প্রাকৃতিক শোভাবর্ধনের পাশাপাশি বৃক্ষ মানুষের জীবনের আবশ্যকীয় মৌলিক চাহিদাও মিটিয়ে থাকে। সবুজ-শ্যামল বৃক্ষরাজি দূষিত বাতাসকে শোধন করে প্রাণিকূলকে বাঁচিয়ে রাখে। বৃক্ষ অক্সিজেন ত্যাগ করে এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। বৃক্ষ আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় রাখে। বৃক্ষ বাতাসে জলীয়বাষ্পের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আবহাওয়াকে শীতল রাখে এবং বৃষ্টিপাতে সাহায্য করে। ভূমিক্ষয়রোধে ও ঝড়ো পরিবেশ নিয়ন্ত্রণেও বৃক্ষের ভূমিকা অপরিসীম। ঘর-বাড়ি নির্মাণ, আসবাবপত্র তৈরি, জলযান নির্মাণ, শিল্পের কাঁচামাল যোগান, সুস্বাদু ফলদান- এ সবকিছুর উৎস বৃক্ষ। বৃক্ষ নিঃশর্তভাবে আমাদের নানা প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে।